ছবি: খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস মহোদয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ।

আজ ২১জুন ২০২১, রোজ সোমবার দুপুর ১২.০০ ঘটিকায় পার্বত্য চট্টগ্রামের ৮টি সামাজিক ছাত্রসংগঠনের যৌথ নেতৃত্বে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকুরিতে ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ কোটা পুনর্বহাল রাখার দাবিতে তিন পার্বত্য জেলায় তিন জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

এই সময় ৮টি সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, জনমুখী পদক্ষেপ সমূহের বিপরীতে দেশের স্বল্প জনসংখ্যার জাতিসত্তার নাগরিকদের মৌলিক অধিকারকে ক্ষুন্ন করে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবরে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে একাধিক শ্রেণীর কোটাসহ “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটা” বিলুপ্ত করা হয়। কোটা প্রথা বিলুপ্তির ফলে দেশের স্বল্প জনসংখ্যার জাতিসত্তাসমূহের সদস্যগণ তাদের কর্মসংস্থানের ন্যায্য অধিকার ও সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে, যা বৈষম্যমূলক।এ বৈষম্য স্থায়ীত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনকে বাধাগ্রস্থ করবে। সরকারের একাধিক নীতিমালা ও অন্যান্য সরকারি নথিতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইনে ২০১০-এ অন্তর্ভূক্ত জাতিসত্তাসমূহকে সংবিধানে “অনগ্রসর অংশ” এর আওতাভূক্ত মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। স্থায়ীত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কার্যকরভাবে পূরণের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটা” পুনর্বহাল করা সরকারের অতি আবশ্যক বলে জানানো হয়।

এছাড়া আরও দাবি জানান, সরকারি কোটা পদ্ধতি বহাল রাখার স্বপক্ষে, সাংবিধানিক ও অন্যান্য আইনি বিধানের যথোপযুক্ত এবং প্রত্যক্ষ সমর্থনও রয়েছে। জাতীয় সংবিধানের ১০, ১৪, ১৯, ২৩ক, ২৭, ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদ এবং এর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ আইন। সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ এর ৭ (২) নং ধারাতে উল্লেখ আছে যে, “সংবিধানের ২৯ (৩) অনুচ্ছেদ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পদ সংরক্ষণ বিষয়ে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে পারিবে” ।

উল্লেখ্য যে, ২৯ (৩) অনুচ্ছেদে নাগরিকদের যেকোনো অনগ্রসর অংশ যাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব লাভ করতে পারেন সেই উদ্দেশ্যে অনুকূলে বিশেষ বিধান প্রণয়নের কথা বলা আছে।

আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তান ও নেপালেও দেশের বিশেষ প্রেক্ষিত অনুসারে, ট্রাইবাল, তফসিলি জাতি, সংখ্যালঘু প্রভৃতি শ্রেনীর জনগোষ্ঠির সদস্যদের জন্য সরকারি চাকরিতে কোটার ব্যবস্থা রয়েছে।তার মধ্যে ভারতে সরকারি চাকরিতে সাধারণ কোটা রয়েছে ৪০.৫০%, বিভিন্ন গোষ্ঠি ও সাধারণ মানুষের জন্য কোটা রাখা হয় ৫৯,৬০%। যার মধ্যে তফসিলি জনজাতির জন্য কোটা রয়েছে ৭,৫০%, তফসিলি জাতির জন্য কোটা রয়েছে ১৫% এবং অনান্য অগ্রসর শ্রেনীর জন্য কোটা রাখা রয়েছে ১০%। নেপালে আদিবাসী-জনজাতির সহ ৪৫% সরকারি চাকরি বিশেষ শ্রেণীর প্রার্থীদের জন্য সরক্ষিত, যার মধ্যে ২৭% আদিবাসী- জনজাতির জন্য রয়েছে।

এমতাবস্থায়, সমাজের “অনগ্রসর অংশ” এর মৌলিক অধিকার সংরক্ষণার্থে এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২০-২০২৫) ও এসডিজি অর্জনের লক্ষ্যে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী আইন ২০২০ এ স্বীকৃত জাতিসত্তাসহ দেশের সকল স্বল্প জনসংখ্যার জাতিসত্তার সদস্যদের সরকারি চাকরিতে ন্যায্য ও বৈষম্যহীনভাবে অন্তর্ভূক্তি ও সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতিমালার পুর্নাঙ্গ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় আইনি ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়।

বিগত ১৩ই জুন ১০.৩০ ঘটিকায় ১ম ও ২য় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কোটা পুনর্বহালের দাবিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি সংবাদ সম্মেলন করেছে । তারই প্রেক্ষাপটে আজ তিন পার্বত্য জেলায় সংগঠনসমুহের যৌথ নেতৃত্বে ডিসি মহোদয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

ছাত্র সংগঠনসমূহ-

১. বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল

২. বাংলাদেশ খেয়াং স্টুডেন্টস ইউনিয়ন

৩. বাংলাদেশ খুমী স্টুডেন্টস কাউন্সিল

৪. বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা স্টুডেন্টস্ ওয়েলফেয়ার ফোরাম

৫. বম স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ

৬. ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম, বাংলাদেশ

৭. বাংলাদেশ ম্রো স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন

৮. উন্মেষ, রাঙামাটি…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here